ভাতের বিকল্প হিসেবে অপ্রচলিত দানা শস্যের ব্যবহার বাড়াতে হবে: বারি মহাপরিচালক

কৃষিবিদ দীন মোহাম্মদ দীনু, বাকৃবি: কৃষকের দোরগোড়ায় বারি উদ্ভাবিত দানা ফসল বিস্তার ঘটাতে হবে। উন্নত ফাইবার, ভিটামিন, পলিস্যাকারাইডস, অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস, একগুচ্ছ খনিজ পুষ্টি উপাদানসহ নানামুখী ঔষুধী গুনাগুন সম্ভারে ভাতের বিকল্প হিসেবে অপ্রচলিত দানা জাতীয় শস্যের অবদান অপরিসীম। তাই ভাতের বিকল্প হিসেবে অপ্রচলিত দানা জাতীয় শস্যের ব্যবহার বাড়াতে হবে।

বারি উদ্ভাবিত অপ্রচলিত দানা জাতীয় শস্যের বিভিন্ন জাতের উৎপাদন কলাকৌশল শীর্ষক মাঠ দিবস উপলক্ষে শুক্রবার ২২ মার্চ ২০২৪ এক কৃষক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন ,দানা ফসল বারি ওট-১ ফসল কৃষকের মাঝে জনপ্রিয় করতে সংশ্লিষ্টদের তাগিদ দেন তিনি ।

তিনি আরো বলেন, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এই দানা শস্যের উৎপাদন সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশ কৃষি গবেষেণা ইনস্টিটিউট ইতোমধ্যেই ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। গম ভূট্টা বাদে অপ্রচলিত দানা শস্যের মোট ২১ টি জাত ইতোমধ্যেই অবমুক্ত করেছে যারা পুষ্টিগত দিক দিয়ে কৃষকের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় ।

চট্টগ্রামের হাটহাজারীস্থ আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের উদ্যোগে এবং পার্টনার বারি অংগের অর্থায়নে মাঠ দিবস ও কৃষক সমাবেশে সভাপতিত্ব করেছেন মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. সহিদুল ইসলাম খান।

বারি এর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো.রাশেদ সরকারের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, ড. জগদীশ চন্দ্র বর্মন, এজেন্সি কর্মসূচী পরিচালক (পার্টনার বারি অংগ), মো. সামসুল আলম, অধ্যক্ষ, এটিআই, ড. মো. মনিরুজ্জামান, উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, ড. মুহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন রনি, উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, মো. আল মামুন শিকদার, কৃষি অফিসার, মো. ফরিদ-উজ-জামান, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, কৃষক মো. তৌহিদুল আলম, মো. রাশেদ প্রমুখ।

মাঠ দিবসে কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভিটামিনসহ একগুচ্ছ পুষ্টি উপাদানে ভরপুর অপ্রচলিত দানা শস্যসমূহ কোলেস্টেরল , উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, রক্তে সুগারের মাত্রা, শরীরের ওজন, ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে ঔষুধী গুনাগুন সম্পন্ন। তাই, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা খাদ্য উৎপাদন বাড়ানো ও জনস্বাস্থ্য নিশ্চিতে অপ্রচলিত দানা শস্যগুলো চর এবং লবনাক্ত অঞ্চলে মাইলফলক হিসেবে চাষাবাদ হবে। বিজ্ঞানভিত্তিক সিদ্ধান্ত এবং কৃষিপ্রযুক্তি ব্যবহার বাড়াতে পারলে দেশের খাদ্য উৎপাদনে অপ্রচলিত দানা শস্যগুলো বিশেস ভুমিকা রাখতে পারবে। আর তখনই পাবলিক-প্রাইভেট অংশীদার ভিত্তিতে অপ্রচলিত দানা শস্যগুলো জনপ্রীয় লাভ করবে বলে বক্তারা জানান।

পরে কৃষক সমাবেশ শেষে মহাপরিচালক মহোদয় ১০০০ (এক হাজার) ফিট সুরক্ষা প্রাচীর দেয়াল এর কাজ শুভ উদ্বোধন করেন। উৎসবমুখর পরিবেশে এই কৃষক সমাবেশটি এই অঞ্চলের কৃষকদের আশা-আকাঙ্ক্ষার মূর্ত প্রতীক হিসেবে আগামী দিনের নয়া মাইল ফলক হয়ে থাকবে বলে কৃষকেরা মনে করছেন।।