তরমুজের গামি স্টেম ব্লাইট রোগে চাষিদের করণীয়

গামি স্টেম ব্লাইট রোগের লক্ষণ প্রধানত তরমুজ গাছের পাতা, কান্ড এবং ফলের উপর দেখা যায়। এই রোগের লক্ষণগুলো সাধারণত কাণ্ডের উপর শুরু হয় এবং গাছে গাম বা আঠালো পদার্থের নিঃসরণ ঘটে, যা রোগের নামের মূল উৎস। প্রথমদিকে আক্রান্ত স্থানে বাদামী বা কালো রঙের দাগ দেখা যায়, যা পরে ছড়িয়ে পড়ে এবং কান্ডের উপরের অংশ শুকিয়ে যায়। আক্রান্ত পাতায় প্রথমে ছোট ছোট বাদামী বা কালচে দাগ দেখা যায়, যা পরবর্তীতে বড় হয়ে পাতার অধিকাংশ অংশকে ঢেকে ফেলে এবং শুকিয়ে যায়। ফলে, সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয় এবং গাছ দুর্বল হয়ে পড়ে। কৃষক ভাইদের জন্য বলছি; এখনই আপনার তরমুজ ক্ষেতের প্রতি সতর্ক হোন। নিয়মিত খেত পরিদর্শন এবং পর্যবেক্ষণ করুন । তরমুজ ফসলের কান্ডে বা পাতায় কোনোরকম ফাটা ও দাগ পরিলক্ষিত হওয়ার সাথে সাথে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুন এবং সংশ্লিষ্ট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার অফিসে যোগাযোগ করে।

রোগের কারণ: গামি স্টেম ব্লাইট রোগের প্রধান কারণ হলো Didymella bryoniae নামক ছত্রাক।
১. সংক্রমিত বীজ ২. আক্রান্ত গাছের অবশিষ্টাংশ ৩. আক্রান্ত মাটি ৪. বাতাস ও পানি ।
লক্ষণঃ
১. ব্যাপক আক্রমনে পাতা পচে যায়।
২. কাণ্ড ফেটে লালচে আঠা বের হয়।
৩. এ রোগ হলে পাতায় পানি ভেজা দাগ দেখা যায়।
৪. কান্ড ফেটে লালচে আঠা বের হয়।
সমন্বিত ব্যবস্থাপনা (Integrated Management)
১. ক্ষেত থেকে আক্রান্ত গাছ তুলে ফেলা
২. রোগমুক্ত বীজ বা চারা ব্যবহার করা
৩. বীজ শোধন করে শোধিত মাটির পলিব্যাগে বীজ বপন করে মশারির ভিতরে চারা উৎপাদন করতে হবে।
৪. মাদাতে জৈব ছত্রাক নাশক প্রয়োগ করতে হবে, মালচ পেপার দিয়ে বেড ঢেকে দিতে হবে
৫. উপযুক্ত নিষ্কাশন ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৬.পরিমিত সেচ দিতে হবে এবং রোগের লক্ষণ দেখা দিলেই তাৎক্ষনিক ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করতে হবে।
৭. ফসল চক্র বা ক্রপ রোটেশন পদ্ধতি অনুসরণ করা
৮. মাটি শোধন ও পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ
৯.মাটিতে ট্রাইকস্ট, বায়োর্ডামা ব্যবহার করা যেতে পারে।

রাসায়নিক দমন ব্যবস্থাপনাঃ
জেনেজেব, ম্যানকোজেব গ্রুপের ২ গ্রাম / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে ৭-১০ দিন পরপর ৩ বার স্প্রে করা। অথবা মনা (এজোক্সিস্ট্রবিন+ সিপ্রোকোনাজল গ্রুপের) – নিয়মমত ছত্রকনাশক ১০ দিন পরপর স্প্রে করতে হবে।

লেখক: সমীরণ বিশ্বাস, কৃষি ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ , ঢাকা।