গাইবান্ধায় ঘাস চাষে গফুরের চমক

গাইবান্ধার পলাশবাড়ি উপজেলার সুলতানপুর গ্রামে ঘাস চাষে বাম্পার ফলন পেয়েছে আব্দুল গফুর। ঘাস চাষে অনেক চাহিদা দেখে তিনি ২০০৭ সালে স্থানীয় এক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ঘাস চাষ শুরু করেন। বর্তমানে এই ঘাস চাষে কোটিপতি হয়েছেন তিনি। এছাড়া তিনি কৃষি কাজে স্বীকৃতি স্বরুপ ২০১৭ সালে কৃষি উন্নয়নে অবদানের জন্য রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পেয়েছেন। তাকে দেখে অনেক কৃষক এই ঘাস চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

সূত্রে জনা যায়, তিনি গাইবান্ধার পলাশবাড়ি উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের একজন বাসিন্দা। তিনি নিজের ৫ শতক জমিতে নেপিয়ার জাতের ঘাস চাষ শুরু করেন। পরবর্তীতে ঘাস চাষে ফলন ভালো হওয়ায় জমি বর্গা নিয়ে ঘাষের চাষ শুরু করেন। ঘাস চাষে লাভবান হয়ে তিনি একটি ছোট গরুর খামার গড়ে তুলেন। নিজের খামারের পাশাপাশি আশেপাশে অন্যান্যদের খামার থাকায় তিনি খুব সহজেই ঘাস বিক্রি করে লাভবান হতে পারেন।

স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের সূত্র মতে, চলতি বছর এই উপজেলায় ১০৫ জন চাষি ১০ একর জমিতে নেপিয়ার, পাকচং, রেড পাকচং, পারা ও জাম্বু নামের উন্নত জাতের ঘাস চাষ করেন। আগামীতে ঘাসের চাষ বৃদ্ধি পাবে।

আব্দুল গফুর শেখ বলেন, আমি প্রতিদিন নেপিয়ার ঘাস বিক্রি করে দুই থেকে তিন হাজার টাকা আয় করি। এই ঘাস চাষের চাহিদা শুধু গাইবান্ধাই নয় সারাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রয়েছে।

আরেক ঘাস চাষি তানজির হাসান বলেন, আমি প্রায় সাড়ে ৫ একর জমিতে জাম্বু, লাল পাকচং, পাকচং-১, নেপিয়ার ঘাস চাষ করেছি। বর্ষা মৌসুমে চাহিদা বেশি থাকায় উৎপাদিত ঘাস বিশেষ প্রক্রিয়ায় প্যাকেটজাত করে গুদামে সংরক্ষণ করে রেখে পরে বিক্রি করি। এতে লাভবান হই।

ঘাস উৎপাদনে জড়িত কৃষকরা বলেন, প্রতি বিঘা জমিতে ঘাস চাষে গড়ে ১৫-২০ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতি ছয় সপ্তাহ পর পর ঘাস কাটার উপযোগী হয়। প্রতি আটি ঘাস ১০ টাকা করে বিক্রি করা হয়। এতে ৫০-৫৫ হাজার টাকা আয় করা যায়।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা বলেন, দেশে খামারীদের যে পরিমাণ ঘাসের প্রয়োজন হয় তা পূরণ করতে ঘাস চাষের বিকল্প কিছু নেই। এছাড়া আমরা কৃষকদের বিনামূল্যে উন্নত জাতের ঘাসের কাটিং সরবরাহ করে থাকি। ঘাসের বাণিজ্যিক মূল্য নির্ধারণ হলে আমরা একটি বিপণন কেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব পাঠিয়েছি। অনুমতি পেলে বিপণন কেন্দ্র টি স্থাপন করা হবে।