গোলের রস সংগ্রহে ব্যস্ত বরগুনার কৃষকরা

মাহমুদুর রহমান রনি, বরগুনা: গোল গাছের রস সংগ্রহ করে বড় একটি পাত্রে রেখে দীর্ঘ সময় আগুনে তাপ দিয়ে তৈরি করেন মিষ্টি গুড়। এই গুড় এতটাই জনপ্রিয় হয়ে গেছে যে ভারতের কলকাতাসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়েছে। ডায়াবেটিসের রোগীরাও এই গুড় খেতে পারবেন। প্রতিদিন রস থেকে মিষ্টি গুড় তৈরি করে বিক্রি করেন প্রান্তিক গ্রামের গোল চাষী অমৃত হাওলাদার। এ কাজে তার মা ও স্ত্রী সাহায্য করেন। শীতের মৌসুমের কয়েক মাস গোল গাছের রস ও গুড় বিক্রি করে চলে তাদের সংসার।

বরগুনার তালতলী উপজেলার করইবাড়ীয়া ইউনিয়নের বেহেলা গ্রামের গোল চাষী অমৃত হাওলাদারের ৮ সদস্যের পরিবার। জীবিকার তাগিদে গোল গাছের রস দিয়ে গুড় তৈরি করে বিভিন্ন বাজারে বাজারজাত করেন। নিজের কোন জমি জমা না থাকায় অন্যের গোল গাছ চুক্তিটি নিয়ে প্রতিবছর শীত মৌসুমে এ কাজ করেন তিনি। অমৃত হাওলাদারের মতো ওই এলাকায় ১৫০ জনের বেশি গোল চাষীদের সংসার চলছে রস ও গুড় বিক্রি করে। এতে বেহেলা গ্রামে বছরে প্রায় দেড় কোটি টাকার বেশি গুড় বিক্রি হচ্ছে।

তালতলী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ৯০ হেক্টর জমিতে গোল গাছের সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। সবচেয়ে বেশি গুড় আসে বেহালা গ্রাম থেকে। এক মৌসুমে প্রায় ১২ হাজার টন গুড় উৎপাদিত হয়।

গোল চাষী অমৃত হালদার বলেন, প্রথমে রসটি সংগ্রহ করে আগুনে জাল দিয়ে গুড় তৈরি করি এ সময় যদি কোন ময়লা থাকে তা ছেকনির মাধ্যমে পরিষ্কার করে নির্ভেজাল মিষ্টি গুড় তৈরি করি। পরে এটি বাজারজাত করি। এবছর ১২০ টি গোল গাছ রেখেছি ১৫ হাজার টাকা দিয়ে। প্রতি কেজি গুড় বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকায়। এই রস বা গুর বিক্রি করেই আমার সংসার চলে। গোল চাষীদের সরকারিভাবে সাহায্য সহযোগিতার দাবী করেন তিনি।

এ বিষয়ে তালতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন হাওলাদার বলেন, উপজেলার বেহলার গ্রামের গোল চাষের ইতিহাস শতবর্ষ যাবৎ চলতেছে। এখানকার গোলের গুড় খুব সুস্বাদু। স্থানীয় গোল চাষীরা এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রেখেছে। এই গুড়ে কোন ধরনের ভেজাল নেই। আমরা আশা করতেছি সরকারী বা বেসরকারি বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে এই শিল্প কি বাঁচিয়ে রাখতে হবে তা না হলে এই শিল্প হারিয়ে যাবে।