দিনাজপুরে ডালিম চাষে সফলতার স্বপ্ন বুনছেন চাষি আহসান হাবিব রাসেল। এই অঞ্চলের মাটি ডালিম চাষের খুব উপযোগী। আর অল্প খরচে বেশি আয় করা যায় বলে ডালিম চাষে লাখোপতি হওয়ার আশায় আছেন তিনি। ডালিম চাষে তার সফলতা দেখে অনেকেই বেদান বা আনার চাষের আগ্রহ প্রকাশ করছেন। ডালিম চাষ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে নিজেদের আর্থিক উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতেও ভূমিকা রাখা সম্ভব বলে মনে করেন উদ্যোক্তারা।
জানা যায়, চাষি আহসান হাবিব রাসেল দিনাজপুরের চিরিরবন্দরের দক্ষিন নশরতপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি গত দুই বছর আগে ভারত থেকে সুপা ভাগোয়া জাতের ডালিম চারা আনেন। তারপর সেখান থেকে কলম করে চারা করে বাগানে রোপন করেন। বর্তমানে তার ১০ শতক জায়গায় ডালিম বাগান রয়েছে। বাজারে প্রতি কেজি ডালিম ৩০০ টাকা দরে বিক্রি করে রাসেলকে লাখপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখাচ্ছে এই ফলের বাগান।
ডালিম একটি অনেক স্বাস্থ্যকর ফল। এতে প্রচুর পরিমানে পটাশিয়াম ও ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে। এছাড়াও এটি ক্ষিদে বাড়ানো, শরীর স্নিগ্ধ করা, মেদ ও বল বৃদ্ধি করাসহ রুচি বৃদ্ধি, শ্বাসকষ্ট,কাশি ও বাত ব্যধি দূরসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর গুনাবলি রয়েছে।
ফুল থেকে ফল পরিপক্ক হতে ৬ মাস পর্যন্ত সময় লাগে। ফলের খোসার রঙ হলদে-বাদামী হলেই ফল পাড়ার উপযুক্ত হয়। প্রথমে ফল কম ধরলেও ভালো পরিচর্যা নিলে গাছপ্রতি ২০০-২৫০টি ফল পাওয়া যেতে পারে। একটি গাছ ৩০ বছর পর্যন্ত লাভজনক ফলন দিয়ে থাকে।
কৃষক রাসেল বলেন, আমি গত দুই বছর আগে ভারত থেকে সুপা ভাগোয়া জাতের চারা নিয়ে আসি। তারপর সেই চারা থেকে কলম করি। তারপর মৃদুলা, ফুলে আরাক্তা, থাই, অষ্ট্রেলিয়া, পাকিস্তানী, গ্লোসা রসেভিয়া জাতের চারা সংগ্রহ করি। এরপর আমার ১০ শতক জমিতে ৫০ টি চারা রোপন করে চাষ শুরু করি।
তিনি আরো বলেন, ডালিম গাছে বসন্তকালে যে ফুল হয় সেটার ফল হয় গ্রীষ্মকালে। আর বর্ষার সময় যে ফুল হয় সেই ফল কার্তিক, অগ্রহায়ন মাসে সংগ্রহ করা যায়। গাছে ফলের বৃদ্ধি শুরু হলে কাপড় বা পলিথিন দিয়ে বৃদ্ধিমান ফল ব্যাগিং করে দিলে পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। আর এর সঠিক পরিচর্যা করলে ৩০ বছর ফলন দিয়ে থাকে। আমার গাছের ফল গুলো খুব সুন্দর ও খেতে সুস্বাদু। একেকটি গাছে ৬৫টি করে ডালিম ধরেছে। আস্তে আস্তে এর ফলন বাড়বে। বাজারে প্রতি কেজি ডালিম ৩০০ টাকা দরে বিক্রি করি।