তিতির পালনে মাসে আয় ৩ লাখ!

ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার মোক্ষপুর ইউনিয়নের রফিকুল ইসলাম তিতির পালনে সফল হয়েছেন। প্রবাস থেকে ফিরে পরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফেরাতে তিতিরের খামার করেন। বাণিজ্যিকভাবে তিতিরের খামার গড়ে তুলে সফলতার পাশাপাশি বেশ সুনাম হয়েছে তার। বর্তমানে তিতির পাখির ডিম ও বাচ্চা বিক্রি করে মাসে প্রায় ৩ লাখ টাকা আয় করেন।

জানা যায়, তিতির একটি বিদেশি গিনি ফাউল ও চিনা মুরগী নামে পরিচিত। এটি খাচায়ও পালন করা যায়। রফিকুল ইসলাম দীর্ঘ ১৮ বছর প্রবাসে থাকেন। ফিরে এসে বাড়ির চারপাশে মাল্টা, লেবু, পেপের বাগান করেন। তর বাগানের উৎপাদিত ফল বিক্রি করে বছরে প্রায় ১০-১২ লাখ টাকা আয় করতেন। তারপর এই ফলের বাগানের ভেতরেই তিতিরের খামার করেন। খামার করার প্রথম বছরেই বাজিমাত করেছেন। বর্তমান তার ৭টি খামারে প্রায় ৭০০ বড় তিতির রয়েছে। এছাড়াও ছোট ও মাঝারি মিলিয়ে প্রায় ১ হাজারেরও বেশি তিতির রয়েছে তার খামারে।

খামারি রফিকুল ইসলাম বলেন, পরিবারের আর্থিক স্বচ্ছলতা ও জীবিকা নির্বাহের জন্য প্রবাসে ১৮ বছর ছিলাম। তাতেরও ভাগ্য পরিবর্তন না হওয়ায় দেশে এসে বাড়ির পাশে মাল্টা, লেবু, পেপের বাগান করে ভালোই লাভবান হই। পরিচিত একজনের পরামর্শে তিতির পালন শুরু করি। ২০২০ সালে ৩০০টি তিতির পাখি নিয়ে খামার শুরু করি। তারপর প্রথম বছরেই ডিম, বাচ্চা উৎপাদন করে ভালই সাড়া পাই। মাসে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজারের মত ডিম উৎপাদন হয়।

তিনি আরো বলেন, অন্যান্য পাখির থেকে তিতির পাখির রোগ বালাই কম। তিতির পাখি খাবার হিসেবে চাল, সবুজ ঘাঁস, কুড়া, লতাপাতা, পোকামাকড় ইত্যাদি খায়। এতে লালন পালনে খরচ অনেক কম। অন্যান্য পাখির থেকে তিতির পাখির ডিম, মাংস অনেক সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। এ পাখি বছরের বেশীর ভাগ সময় ডিম দিয়ে থাকে। একদিনের বাচ্চা প্রতিপিস একশত টাকা দরে ও ডিম প্রতি পিস পঞ্চাশ টাকা দরে বিক্রি করি। তার পাশাপাশি বড় তিতির পাখিগুলো একেকটা বিক্রি করি ১ হাজার টাকা দরে। এ খামার এখন আরও বড় করার চেষ্টা করছি। আমার খামারে বিশ হাজার তিতির পাখি লালন পালনের পরিকল্পনা আছে।

উপজেলা ভেটেনারী ও প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. হারুন অর রশিদ বলেন, রফিকুল ইসলামের তিতির পাখির খামারটি আমরা পরিদর্শন করেছি। তিতির পাখির খামার বেশ লাভজনক। এই পাখি দেখতে খুব সুন্দর ও এর ডিমও খুব সুস্বাদু। বাংলাদেশে তিতির পাখির বেশ চাহিদা রয়েছে। আমরা তাকে সব ধরনের সহযোগীতা করবো। আর আমরা চাই তাকে দেখে যেনো আরো নতুন উদ্যোক্তার সৃষ্টি হয়।