উৎপাদন বাড়লেও কমছেনা সবজির দাম, অস্বস্তিতে ক্রেতারা

কয়েকদিনের বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে রাজধানীর বাজারগুলোতে। কাঁচামরিচের ঝালে পুড়ছে বাজার, সবজিতেও নেই স্বস্তি টানা সপ্তাহরে ব্যবধানে প্রতিটি সবজিতে বেড়েছে লাগামহীন ভাবে। এছাড়া প্রতিকেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা। শুক্রবার (৫ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

যাত্রাবাড়ী, কারওয়ান বাজার, রামপুরা, শান্তিনগর, সেগুনবাগিচা ও মিরপুর বাজারে বরবটি, করলা, বেগুনসহ বেশ কয়েকটি সবজি দাম ১২০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। পাশাপাশি সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে বসে আছে শসা ও কাঁকরোল। প্রতিকেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়, গাঁজর ১০০ টাকা, গোল বেগুন ১২০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, পটলের কেজি ৬০ টাকা, শসা ১০০ টাকা, ঝিঙ্গা ৬০ টাকা, ধন্দুল ৬০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, বেগুন (লম্বা) ৮০, ঢেঁরস ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, কচুর মুখি ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিভিন্ন বাজার ঘুরে ক্রেতাদের কাছ থেকে জানা যায়, বাজারে কোন কিছুর দাম হাতের নাগালে নেই। যা ধরি তাতেই হাত মাথায় হাত ! সব ধরণের সবজির দাম অনেক বেড়েছে। এগুলো দেখার কেউ নেই। বাজারের বিক্রেতারাও বলেন, সবজির দাম বেশ কিছুদিন ধরেই বাড়তি। টানা বৃষ্টির কারণে সবজি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পরিবহন করে আনা যাচ্ছে না। এতেই দাম বেড়ে গেছে। পাইকারি বাজারে দাম বেশি হলে এর প্রভাব তো খুচরা বাজারে পড়বেই।

সপ্তাহের চেয়ে ১০ টাকা বেড়ে শতক ছাড়িয়েছে পেঁয়াজের দাম। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। এছাড়া দেশি হাইব্রিড জাতের পেঁয়াজের কেজি ৯০ থেকে ১০০ টাকা দরে। বেড়েছে মাছের দামও। কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে রুই মাছ বিক্রি হয়েছে ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকায়। তেলাপিয়া ও পাঙাশ মাছের দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৪০ টাকা। অন্যদিকে বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৮০ টাকায়, সোনালী মুরগি ৩৪০ টাকা, কক ৩৩০ টাকা, লেয়ার ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগের বাড়তি দামেই প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৮০ টাকা এবং খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১১০০ টাকা দরে।

দুমাস আগের ৩০-৪০ টাকার টমেটো এখন বাজারে ১৮০-২০০ টাকা ! তাও আবার ভারত থেকে আসতে শুরু করেছে। দুমাস আগের ৫০-৬০ টাকার কাচামরিচ এখন বাজারে ২৮০-৩০০ টাকা। পিয়াজ, গাজর ও আদার কথা নাই বল্লাম। আমরা এত কথা বলি, সরকার, বারি, কৃষি মন্ত্রণালয়, বিএডিসি, বিনা, ডিএই, কৃষি বিপনন, হর্টিক্যালচার আরো কত কি ? আমরা সবাই উৎপাদন বাড়িয়েছি, সেই গর্ভে আত্মহারা ! কিন্তু বাস্তবতা তো এটাই যে, সবজি ও ফল সংরক্ষণেও (১%-২%) গত ৫০ বৎসরেও দৃশ্যমান কিছুই করতে পারি নাই। শুধু গাল ভরা গপ্পো আর গপ্পো। ফল, সবজি ও মসল ফসলের সংরক্ষণ ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত পরিকল্পনার মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে।

লেখক: সমীরণ বিশ্বাস
কৃষি ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ, ঢাকা।