সুপারির ভাল দাম ও চাহিদা থাকায় দিন দিন রংপুর অঞ্চলে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে সুপারি চাষ। চাষিরা জানিয়েছেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর সুপারি গাছে গড়ে তিনগুণ বেশি ফলন হয়েছে। বাজারে দামও ভালো পাচ্ছেন তারা।
কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান- রংপুর সদর, মিঠাপুকুর, পীরগাছা, পীরগঞ্জ, তারাগঞ্জ ও বদরগঞ্জ এলাকায় প্রচুর সুপারি চাষ হয়। পাশাপাশি কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও নীলফামারী জেলায়ও প্রচুর পরিমাণে সুপারির চাষ হয়ে থাকে। সুপারি গাছে তেমন কোনো যতœ নেয়ার প্রয়োজন হয় না। এর কোনো ডালপালাও থাকে না। রংপুরের পৌর বাজার ও লালবাগ বাজারসহ জেলার প্রতিটি উপজেলা ও ইউনয়ন পর্যায়ে সুপারির বাজার গড়ে উঠেছে। এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া সুপারি চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় ফলনও বাড়ছে।
বাগান মালিক ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ফলন বেশি হওয়ায় মৌসুমের শুরুতেই বাজার সয়লাব হয়ে গেছে সুপারিতে। বাজারে ক্রেতার সংখ্যাও প্রচুর; তাই দামও অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি পাওয়া যাচ্ছে। এ মৌসুমে সুপারির আকার হয়েছে বড়।
কৃষকরা জানান- চৈত্র, বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ এই তিন মাসে গাছে সুপারি পাকতে শুরু করে। অপরদিকে, সুপারি গাছে নতুন করে ফুল ও ফল আসা শুরু হয়। বসতবাড়ির আশপাশে এবং উঁচু জমিতে চারা লাগানোর আড়াই থেকে তিন বছরের মধ্যেই ফল দিতে শুরু করে সুপারির গাছ। বছরে এক-দু’বার গোবর সার আর পানির সেচ দেওয়া ছাড়া আর তেমন কোনো বাড়তি পরিচর্যা করা লাগে না।
পীরগাছার পারুল ইউনিয়নের সফর উদ্দিন খান বলেন, আমার জমির আইল ও বাড়ির আশপাশে প্রায় শতাধিক সুপারি গাছ আছে। প্রতিবছর গাছে প্রচুর পরিমাণে সুপারি ধরে। খাওয়ার জন্য রেখে পাইকারদের কাছে বিক্রি করে দেই। আয় হয় বেশ ভালো। সুপারি গাছ একবার লাগালে ১০-১৫ বছর ফল পাওয়া যায়। চাহিদা ভালো থাকায় সুপারি অধিক লাভে দ্রুত বিক্রি হয়। ছায়াযুক্ত জায়গাতেও সুপারি গাছ বড় হয়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল জানান, রংপুরের আবহাওয়া ও মাটি সুপারি চাষের জন্য বেশ উপযোগী। এছাড়াও সুপারি চাষাবাদে অনেক শিক্ষিত মানুষও এগিয়ে আসছেন এবং যথাসময়ে গাছের পরিচর্যা করছেন। এতেও উৎপাদন বাড়ছে। আশা করি ফলন আরো ভালো হবে।