ভাসমান বেডে সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা

বছরের বেশিরভাগ সময়ই পানিতে ডুবে থাকে জমি তাই সেই জমিতে ভাসমান বেড তৈরি করে উৎপাদন করা হয় বিভিন্ন ধরনের সবজি। এই পদ্ধতিতে সবজি চাষ চলে আসছে বহু বছর ধরে। চলতি বছরও ব্যাপকভাবে ভাসমান বেডে সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার বিলাঞ্চলের কৃষকরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার কলারদোয়ানিয়া, পদ্মডুবি, মনোহরপুর, দেউলবাড়ি, সোনাপুর, বিলডুমরিয়াসহ বিভিন্ন বিলে কৃষকরা কচুরিপানা, দুলালীলতা, শ্যাওলা, টেপাপানা, গুঁড়িপানা ইত্যাদি জলজ উদ্ভিদের সঙ্গে খড়কুটা এবং নারিকেলের ছোবড়াগুঁড়া মিলিয়ে স্তরে স্তরে সাজিয়ে তৈরি করছেন ভাসমান বীজতলা বা ধাপ ভাসমান বেড। এই বেডেই রোপণ করবেন সা, কাঁকরোল, মিষ্টিকুমড়া, লাউ, বেগুন, টমেটো, পেঁপে, মরিচের চারা এ ছাড়া লালশাক, পালংশাক, মুলাসহ নানা প্রকার সবজি।

কৃষক রমিজ উদ্দিন বলেন, এলাকার অধিকাংশ জমিতে এক ফসল হয়। বছরে প্রায় ৬ মাস পানিতে তলিয়ে থাকে। তাই এই সময় জমি ফেলে না রেখে ভাসমান বেডে সবজি চাষ করা হয়। এবার ২০টি বেডে সবজি চারা চাষ করেছি। বেড প্রতি তৈরি করতে খরচ হয়েছে ১১ হাজার টাকা, চারা বিক্রি গেল বছরের তুলনায় এ বছর দাম কিছু বৃদ্ধি থাকায় আশাকরি বেড প্রতি ২০ হাজার টাকার চারা বিক্রি করতে পারবো।

আরেক কৃষক মো: নেয়ামাতুল্লাহ জানান, ভাসমান বেড তৈরির পর উপরিভাগ আবাদ উপযোগী হতে ১৫-২০ দিন সময় লাগে। বেড তৈরির পর তাতে সারি করে সরাসরি বীজ বোনা যায়। আবার বল বা বিড়ায় তৈরি করা চারা নির্দিষ্ট দূরত্বে বেডে রোপণ করা যায়। আদা, হলুদ, কচু প্রভূতি ফসল সরাসরি রোপণ করা যায়। চারা পাঁচ-ছয় ইঞ্চি হলে এবং শিকড়ের মাথা বল থেকে বের হলেই (কালো হওয়ার আগেই) বেডে লাগাতে হবে।

নাজিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইশরাতুচ্ছে এশা বলেন, চাষের খরচ তুলনামূলকভাবে খুবই কম। সেচের প্রয়োজন পড়ে না। খুব কম সার ও বালাইনাশক ব্যবহার করে ফসল উৎপাদন করা যায়। ভাসমান বেডে সবজি উৎপাদনকারী কৃষকদের আমার দফতর থেকে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সবজি ও মশলা প্রদর্শনী দেয়া হয়।