ফেনীতে কুল চাষে চাষিদের সাফল্য!

ফেনীতে দিন দিন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে কুল চাষ। ইতোমধ্যে বাণিজ্যিকভাবে উচ্চফলনশীল জাতের কুল চাষ করছেন কৃষকরা। চাষিরা বলসুন্দরি, কাশ্মীরি, ভারত সুন্দরি, টক-মিষ্টিসহ আরো বিভিন্ন জাতের ছোট-বড় কুলের বাগান করেছেন। অল্প সময়ে চাষ একটি লাভজনক ব্যবসা হওয়ায় কৃষক ও শিক্ষিত বেকার যুবকরা কুল চাষে ঝুঁকছেন।

জানা যায়, দেশে প্রতি বছরই কুলের চাহিদা বাড়ছে। পাশাপাশি চাষিরাও অধিক পরিমানে চাষ করছেন। বর্তমানে ফেনী জেলার অনেক চাষিরা চাষে আগ্রহী হয়েছেন। চাষিরা বলসুন্দরি, কাশ্মীরি, ভারত সুন্দরি ও টক-মিষ্টিসহ বিভিন্ন প্রজাতির কুলের চাষ করছেন। বাজারে কুলের ব্যাপক চাহিদা থাকায় কুল চাষ করে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা।

জেলার কৃষি অফিসের মতে, চলতি মৌসুমে এ জেলায় প্রায় কোটি টাকার কুল উৎপাদন হবে।

কুল চাষি আছমত আলী বলেন, আমি ফেনী পৌর শহরের ফলেশ্বরে ৪০ শতাংশ জায়গায় কাশ্মীরী, বল সুন্দরী, বাউকুল, আপেল সহ নানা জাত চাষ করেছি। বাগানে কুলের বাম্পার ফলন হয়েছে। বিক্রি করার জন্য বাজারে নিতে হয় না। পাইকাররা বাগানে এসেই নিয়ে যাচ্ছেন। আমার দেখাদেখি আরো অনেক কৃষক কুলের বাগান করেছেন।

তিনি আরো বলেন, ৪০ শতকের সাথে আরো ১০ শতক জায়গায় কুলের চারা রোপন করেছি। বাগানে প্রায় লাখ খানেক টাকা খরচ হয়েছে। ইতোমধ্যে ৫০ হাজার টাকার কুল বিক্রি করেছি। আশা করছি ২ লক্ষ টাকার কুল বিক্রি করতে পারবো।

ফেনী সদর উপজেলার আমিন বাজার এলাকায় তিন বন্ধু তোফায়েল আহমেদ রনি, জাহিদুল ইসলাম ও মাসুদুর রহমান বলেন, আমরা তিন বন্ধু মিলে জান্নাত এগ্রো নামে একটি কৃষি প্রকল্প করেছি। আমাদের প্রকল্পের মধ্যে ৫ একর জমিতে ৮ হাজার কুলের গাছ রোপন করেছি।

তোফায়েল আহমেদ রনি বলেন, আমরা গত বছর গাছগুলো রোপন করেছিলাম। আর এবছরই ফলন পেয়েছি। ইতোমধ্যে ১৩০ টাকা কেজী দরে ৫০০ কেজি বিক্রি করেছি। আশা করছি চলতি মৌসুমে ৭-৮ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবো। এছাড়াও আরো অনেক কৃষক চাষ করেছেন। বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় কুল চাষ করে চাষিরা লাভবান হচ্ছেন।


কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ফেনীর উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মিঠুন ভৌমিক বলেন, জেলায় প্রায় ৮৬ হেক্টর জমিতে কুলের আবাদ হয়েছে। যার উৎপাদন প্রায় লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৯৩৮ মেট্রিক টন।

ফেনী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমীন আক্তার বলেন, ফেনীতে কুলের বাণিজ্যিক আবাদ বাড়ছে। অল্প খরচে লাভবান হওয়া যায় বলে কৃষকরা চাষে ঝুঁকছেন। আর ফেনীর মাটি চাষের উপযোগী হওয়ায় ফলনও বেশি হচ্ছে। অনেক কৃষক চাষ করে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হয়েছেন। আমরা চাষিদের সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করছি।