মাহমুদুর রহমান রনি, বরগুনা: মুসলমানের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহার বাকি আর মাত্র ১ দিন। এ উপলক্ষে খামারি ও ক্রেতারা পশু কেনাবেচা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ার কথা থাকলেও পাথরঘাটা উপজেলার বাজার গুলোতে দেখে গেছে ভিন্ন চিত্র। হাজার হাজার গরু নিয়ে বিক্রেতা বাজারে আসলোও ক্রেতার সংখ্যা রয়েছে খুবই কম। বিক্রেতার গরু বিক্রি করতে না পেরে আবার গরু নিয়ে খামারে ফিরছে এরকম চিত্র দেখা যায় প্রতিটা বাজারে। বাজার গুলোতে কিছু সংখ্যক গরু বিক্রি হলে সেগুলো বিক্রি হচ্ছে মাঝারি আকারে গরু। চাহিদা নেই কোন বড় আকারে গরুর। বিক্রেতা বিক্রি করছে তাদের গরু নির্ধারিত মূল্যের কমে। গরু বিক্রি করতে না পেরে হতাশায় কটছে অনেক খামারির দিন।
পাথরঘাটা উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য মতে, চলতি বছর পাথরঘাটায় চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত পশু প্রস্তুত আছে। এবারের ঈদে পশুর চাহিদা রয়েছে ৮ হাজার ৪৯৫টি। চাহিদার তুলনায় ১ হাজার ৫৬৬ টি পশু বেশি প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্যে গরু ও মহিষ রয়েছে ৬ হাজার ১৩৯ টি, ছাগল ও ভেড়া রয়েছে ৩ হাজার ৯২২টি । মোট পশু প্রস্তুত রয়েছে ১০ হাজার ৬১ টি। গতবছরের চেয়ে এ বছর ৭১৩ টি পশু প্রস্তুত বেশি হয়েছে পাথরঘাটা উপজেলায়।
স্থানীয় গরুর ব্যাপারী আমজু বলেন, প্রতিবছর আমরা গরু ক্রয় করে সেগুলো উত্তর অঞ্চলে বিক্রি করে থাকি। উত্তর অঞ্চলে এ বছর গরুর চাহিদা নেই। সেজন্য এ বছর আমাদের এলাকায় গরুর চাহিদা কম তাই গরুর দাম ও কম । গতকাল মুন্সিরহাট বাজারে প্রায় ১ হাজার গরু উঠেছে তার মধ্যে ১ শত গরু বিক্রি হয়নি।
বাজারে গরু নিয়া আসা বিক্রেতা কালু মিয়া জানান, ২টি গরু নিয়ে এসেছি বিক্রি করতে। আজ একটি গরু বিক্রি করতে পারলাম না। একটি গরুর দাম চেয়েছিলাম ১ লাখ ২০ হাজার টাকা আরেকটি গরুর দাম চেয়েছিলাম ১ লাখ ৫ হাজার টাকা। এই দামে গরু বিক্রি করতে পারলে মোটাতাজা করতে যে খরচ হয়েছে তা বাদ দিয়ে কিছুটা লাভ হতো। কিন্তু বাজারে এসে দেখলাম ক্রেতা নেই বাজারে গরুর দাম কেউ জিজ্ঞাসা করতেছে না। শুধু একটি গরুর দাম বলেছে ৮০ হাজার টাকা। এই দামে গরু বিক্রি করলে আমার অনেক লোকসান হবে। তাই আজ গরু বিক্রি করিনি। সামনে আর মাত্র একটি বাজারে গরু নিতে পারব জানিনা সেদিন গরু বিক্রী করতে পারব কিনা।
পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আল মামুনর বলেন , উপজেলার সকল বাজারে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা রয়েছে। বাজারে আসা ক্রেতা-বিক্রেতারা পশু ক্রয়-বিক্রয় করে যাতে নির্বিঘ্নে বাড়ী ফিরতে পারে সেই ব্যবস্থা নিয়েছি।
পাথরঘাটা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, উপজেলায় চাহিদার তুলনায় বেশী গবাদি পশু বেশী রয়েছে। বাজারে গরু বেশী উঠায় দাম একটু কম। পাথরঘাটার খামারিরা কোনো অসদুপায় অবলম্বন করে গরু মোটাতাজা করেন না। আমরা প্রতিনিয়ত খামারিদের সঙ্গে বৈঠক করি এবং তাদের সচেতন করি। আমরা পশু গুলকে সময়মতো ভিটামিন ও ভ্যাকসিন দিয়েছি। এ ছাড়া খামারিদের ওপর সবসময় নজরদারি ছিল ।