দীর্ঘদিন পেঁয়াজ সংরক্ষণে রেডিয়েশন প্রয়োগে সাফল্য

প্রতিবছর বাংলাদেশে শুধুমাত্র সংরক্ষণের অভাবে প্রায় ২০-৩০ শতাংশ পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যায়। তাই উৎপাদিত পেঁয়াজ যাতে যত্রতত্র নষ্ট হয়ে না যায় সেজন্য রেডিয়েশন প্রয়োগ শুরু করেন বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) এর একদল বিজ্ঞানী। কয়েক বছরের চেষ্টায় এই পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে পেঁয়াজ সংরক্ষণে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন তারা।

বিজ্ঞানীদের গবেষণায় জানা যায়, রেডিয়েশন কিংবা গামা রশ্মি পদ্ধতি একটি বহুল ব্যবহৃত পদ্ধতি। যেটি পৃথিবীর বহু দেশে পেঁয়াজ সংরক্ষণে ব্যবহার হচ্ছে। এটি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রায় ৭-৯ মাস পর্যন্ত পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা যাচ্ছে। শুধুমাত্র পেঁয়াজ সংরক্ষণেই নয়, এর পাশাপাশি রসুন, আলু, আম, কলা, পটোল, করলাসহ অন্যান্য ফসল সংরক্ষণে এটি ব্যবহার করা হচ্ছে।  যার মাধ্যমে পেঁয়াজের ওজন হ্রাস, পচন, স্পাউটিং কমিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে।

ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. নাসরীন আখতার জানান, প্রতিবছর বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। দেশীয় উৎপাদন ব্যবস্থায় পেঁয়াজের চাহিদা মেটানো সম্ভব হয়না। এছাড়াও পেঁয়াজ ঘরে তোলার পর বিভিন্ন কারণে পচে যায় এতে চাষির অনেক লোকসান হয়। রেডিয়েশন পদ্ধতির মাধ্যমে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করলে অনেকদিন পর্যন্ত পেঁয়াজ ভাল থাকে।

তিনি আরও বলেন, গবেষোণায় দেখা গেছে, ১০০ গ্রাম ডোজ গামা রশ্মি প্রয়োগের ফলে পেঁয়াজের গাছ গজানো বন্ধ হয়েছে। এতে পেঁয়াজের ওজন হ্রাস ও পচন কম হচ্ছে। সাধারণ পদ্ধতিতে রেডিয়েশন প্রয়োগ ছাড়া পেঁয়াজকে জুলাই-জানুয়ারি পর্যন্ত মাচায় সংরক্ষণ করা হয়।

বিনার মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম জানান, কৃষকদের কথা মাথায় রেখে বাণিজ্যিকভাবে রেডিয়েশন প্রয়োগ করার জন্য বিশ্বব্যাংকের পার্টনার প্রকল্পের আওতায় ১১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বিনা আঞ্চলিক গবেষণা কেন্দ্র ও গাজীপুরে গামা সেন্টার স্থাপন করার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে।