এডব্লিউডি হল এক ধরনের সেচ প্রযুক্তি। যার মাধ্যমে ধান ক্ষেতে সেচ কিংবা পানির নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার করা যায়। এতে করে অতিরিক্ত পানির অপচয় রোধ করে খরচের পরিমাণ কমানো যায়। এতে করে স্বল্প খরচে চাষিরা তাদের জমিতে সেচ দিতে পারে।
জানা যায়, কৃষি বিভাগ পানির এই অপচয় রোধে পরিবর্তিত শুকনা ভেজা (এডব্লিউডি) নামে প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা থানার রুয়াপাড়া, চড়িয়া উজির গ্রামের বিভিন্ন মাঠে এই পদ্ধতিতে সেচ দেয়া হচ্ছে। এতে করে পানির অপচয় রোধ হচ্ছে অন্যদিকে সেচ মালিকদের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খরচও সাশ্রয় হচ্ছে। বাড়ছে ধানের ফলন। কমছে রোগ বালাই। গত দুই বছর ধরে এই পদ্ধতিতে ধান চাষ করে ব্যাপকভাবে লাভবান হচ্ছেন জেলার প্রান্তিক চাষিরা।
এ প্রসঙ্গে ধান চাষি আব্দুল আলিম বলেন, আগে ধান উৎপাদন করতে প্রচলিত পদ্ধতিতে জমিতে সেচ দিতাম। এতে করে অনেক টাকা খরচ হত। গত দুই বছর ধরে নতুন এই পদ্ধতিতে সেচ দিচ্ছি এতে কম খরচে সেচ দেয়া যায়। এ পদ্ধতি ব্যবহার করে আমরা ধানের ভাল ফলন পাচ্ছি। এ এলাকায় আমাদের দেখাদেখি এবার সব কৃষক এর ব্যবহার শুরু করেছেন।’
এ পদ্ধতিতে ১২ ইঞ্চি একটি প্লাষ্টিক পাইপের ৯ ইঞ্চি চারদিকে একাধিক ছিদ্র করা হয়। এরপর সেই পাইপ ধানের জমিতে নির্দষ্ট যে কোন স্থানে বসানো হচ্ছে। ৯ ইঞ্চি মাটির নিচে পুতে ৩ ইঞ্চি উপরে রাখা হচ্ছে। এরপর পাইপের ভিতরের মাটি বের করে ফাঁকা রাখা হয়। মাটিতে পোতা পাইপের ছিদ্র দিয়ে পানি প্রবেশ করে। নিচে সেই পানির উপস্থিতি দেখে প্রয়োজন মতো জমিতে সেচ দেওয়া হয়।
চড়িয়া উজির এলাকার নলকূপ মালিক চাঁদ আলী দেওয়ান বলেন, এর আগে জমিভর্তি করে পানি দিতাম। এতে ক্রএ বেশি পানি তলার জন্য বেশি করে বিদ্যুৎ বিল আসতো। কিন্তু কৃষি কর্মকর্তারা সেই ধারণা বদলে দিয়েছে। ধান চাষের জন্য জমি ভর্তি করে পানি দেয়ার প্রয়োজন নেই। সেটা আগে জানতাম না। পরবর্তীতে নতুন এই পদ্ধতে ব্যবহার করছি। এতে খরচ অনেক কমে গেছে।
সিরাজগঞ্জ কৃষিসম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাবলু কুমার সূত্রধর বলেন, ‘সারাদেশে ব্যাপকভাবে এ পদ্ধতি ছড়িয়ে দেওয়া গেলে কৃষকরা যেমন লাভবান হবে। তেমন ভূগর্বস্থ্য পানির অপচয় রোধ করা যাবে। পাশাপাশি অতিমাত্রায় কিটনাশকের ব্যবহার কমে আসবে। এতে মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত হবে।’