তীব্র দাবদহে জনজীবন বিপর্যস্ত। মানুষের পাশাপাশি প্রচন্ড গরম আর রোদে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে মাঠের ফসল। পর্যাপ্ত পানির অভাবে ধান, আম, লিচু, কাঁঠাল, জাম সহ বিভিন্ন ধরনের ফসলের কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। দেশের সর্বত্রই বেড়েছে তাপমাত্রা। ফলে অস্বাভাবিকভাবে পুড়ে যাচ্ছে ফসলের মাঠ। এতে দীর্ঘমেয়াদে লোকসানের আশঙ্কা করছেন চাষিরা।
রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম সহ আশেপাশের বিভিন্ন জেলা ঘুরে দেখা গেছে, শত শত বিঘা জমির ধান, ভুট্টা, মরিচ, আম, কাঁঠাল, লিচুর বাগান রোদে পুড়ে যাচ্ছে। রোদের তাপে পুড়ে যাচ্ছে গাছের পাতা। এছাড়াও ফসলে দেখা দিয়েছে বিভিন্ন ধরনের রোগ। আক্রমণ করছে পোকা। এতে করে ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন। ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে চাষিরা।
লালমনিরহাট জেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের চাষি একরামুল বলেন, চলতি বছর ২ বিঘা জমিতে ভুট্টার চাষ করেছি। প্রত্যাশামত ভাল ফলনও এসেছে। কিন্তু প্রচন্ড রোদে গাছের পাতাগুলো পুড়ে যাচ্ছে। এতে করে ভুট্টার মোচা কুচকে গেছে। লোডশেডিং এর জন্য ভালভাবে সেচও দেয়া যাচ্ছেনা। এবার ফলন অনেক কম হবে বলেও তিনি আশঙ্কা করছেন।
কুড়িগ্রাম চিলমারীর কৃষিওক রমিজ বলেন, এবার ২০ শতক জমিতে মরিচের চাষ করেছি। প্রচন্ড রোদে ভাল ফলন হয়নি। বৃষ্টি না হওয়ায় খরায় মাঠ পুরে চৌচির হয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য ফসল আবাদ করার জন্য গরমের কারণে জমিতে হাল দেওয়া যায়নি। দুপুরের পর থেকে রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা। নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বের হচ্ছেনা।
তিনি আরও বলেন, ধানের পাশাপাশি এবার লটকনের ভাল ফলনের আশাক করেছিলাম কিন্তু গরমে লটকন ঝরে যাচ্ছে। লোডশেডিংয়ের কারণে সেচ দেওয়া যাচ্ছে না।
আরও পড়ূনঃ মুক্তা চাষে আয় ১৫ লাখ টাকা
রংপুর বুড়ির হাট এলাকার লিচু চাষি পিন্টু বলেন, প্রখর রোদে লিচুবাগানে এক রকমের খরা দেখা দিয়েছে। সেচ দিয়েও গাছের আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনা যাচ্ছে না। তীব্র তাপে লিচু ফুলের শীষ শুকিয়ে যাচ্ছে, পচন ধরছে ফলের গুটিতে।
এদিকে কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন ধানের খেতে বেশি পানি লাগবে না। বরং শুধু ধানের জমি তথা খেত ভেজা থাকলেই চলবে। কারণ, এখন ধান বের হচ্ছে এবং দিনে দিনে পরিপক্ব হবে। শুরুতে যে পরিমাণ পানির প্রয়োজন, এখন সেই পরিমাণ পানি না দিলেও চলবে। তবে প্রতিদিনই ধানগাছের গোড়ায় পানি থাকতে হবে।